প্রোস্টেট ক্যান্সার

প্রোস্টেট হচ্ছে পুরুষের শ্রোণীচক্রে অবস্থিত অনেকটা আখরোটের মত দেখতে একটি ছোট গ্রন্থি যাতে বীর্য তৈরি হয়। শুক্রাণু এই বীর্যতে থাকে এবং এর মাধ্যমেই বাহিত হয়। প্রোস্টেট গ্রন্থির টিস্যুর মধ্যে ক্যান্সারের কোষ তৈরি হয়। ত্বকের সাথে সম্পর্কিত নয় যে ক্যান্সারগুলো সেগুলোর মধ্যে এটি একটি এবং ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে আমেরিকান পুরুষদের মৃত্যুর দ্বিতীয় বৃহত্তম কারণ হচ্ছে এই ধরনের ক্যান্সার। যদিও প্রোস্টেট ক্যান্সারের বিস্তৃতি খুব ধীরে ধীরে ঘটে এবং তা সচরাচর প্রোস্টেট গ্রন্থির মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে, কিছু কিছু ধরনের প্রোস্টেট ক্যান্সার খুব ভয়ংকর আকার ধারণ করে এবং তা খুব দ্রুত রক্ত প্রবাহ বা লিমফ্যাটিক সিস্টেমের মাধ্যমে প্রোস্টেট গ্রন্থির কাছাকাছি অঙ্গ যেমন মূত্রাশয় বা হাড়ে ছড়িয়ে পড়ে। 

পরিসংখ্যান
বয়স্ক ও নন-হিস্পানিক পুরুষের মধ্যে এর সংক্রমনের ঝুঁকি অধিক থাকে। গড়পড়তা ৫০-৬৫ বছর বা এর চেয়ে অধিক বয়সী পুরুষরা আক্রান্ত হয়ে থাকেন, কিন্তু ৪০ বছরের নীচে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনা বিরল। আমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির এক রিপোর্ট অনুযায়ী, ২০২১ সালে প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত নতুন রোগীর সংখ্যা প্রায় ২৪৮,৫৩০ এবং আক্রান্ত হয়ে মৃতের সংখ্যা প্রায় ৩৪,১৩০। 

ঝুঁকির কারণ এবং লক্ষণ

যেসকল কারণে আপনার প্রোস্টেট ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে-

  • অধিক বয়স (৬৫ এর বেশী)
  • জাত (নন-হিস্পানিক ব্ল্যাক)
  • পূর্বপুরুষদের কারো শরীরে প্রোস্টেট ক্যান্সার বা স্তন ক্যান্সারের জিন (BRCA1 or BRCA2) থেকে থাকলে
  • হরমোনের ভারসাম্যতায় বিঘ্ন ঘটলে
  • অস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করলে
  • স্থুলতা
  •  ধূমপান

লক্ষনগুলোর মধ্যে রয়েছে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া, প্রস্রাব কমে যাওয়া, প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া, বীর্যের সাথে রক্ত যাওয়া, হাড়ে ব্যথা, ওজন কমে যাওয়া, সঙ্গমে অপারগতা।

প্রতিকার
স্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ, জীবনযাপনের ধরণ পাল্টানো, ব্যায়াম করা, স্বাস্থ্যসম্মত ওজন বজায় রাখা এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করার মাধ্যমে প্রোস্টেট ক্যান্সারের ঝুঁকি হ্রাস পেতে পারে। প্রোস্টেট ক্যান্সারের প্রাথমিক চিকিৎসা নিশ্চিতের জন্য নিয়মিত স্ক্রিনিং অনিবার্য।  বেশকিছু গবেষণায় দেখা গেছে ফিনাস্টেরাইড (প্রোপেসিয়া, প্রোস্কার) ও ডিউটাস্টেরাইড (অ্যাভোডার্ট) এর মত ৫-আলফা রিডাকটেজ ইনহিবিটর ব্যবহারের ফলে প্রোস্টেট গ্রন্থি বেড়ে গিয়ে ক্যান্সারে রূপান্তরের ঝুঁকি অনেকাংশে কমায়।  

চিকিৎসা
রোগের বর্তমান পরিস্থিতি অনুযায়ী প্রোস্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। বর্তমানে যে চিকিৎসাগুলো প্রদান করা হয়ে থাকে সেগুলো হলো কেমোথেরাপি (ডোসাট্যাক্সেল, ক্যাবাজিট্যাক্সেল, মিটোজ্যানট্রোন, এস্ট্রামাস্টিন), রেডিও থেরাপি, ইমিউনো থেরাপি( সিপুলিউসেল-টি ভ্যাক্সিন, পিডি-১ ইনহিবিটর; ক্রায়ো থেরাপি, হরমোন থেরাপি (এলএইচআরএইচ অ্যান্টাগোনিস্ট, অর্কিয়োক্টমি), টার্গেটেড থেরাপি (পিএআরপি ইনহিবিটর) এবং অপারেশন (ওপেন প্রোস্টাটেকটমি, ল্যাপরোস্কপি প্রোস্টাটেকটমি, প্রোস্টেটের(টিইউআরপি) ট্রান্সইউরেথ্রাল রিসেকশন)। 


Fighting Cancer Desk
ফাইটিং ক্যান্সার ডেস্ক