সার্ভিক্যাল ক্যান্সার জরায়ুর নীচের অংশে অর্থাৎ সার্ভিক্সে শুরু হয়ে থাকে। সার্ভিক্স জরায়ুর নীচের অংশের সাথে যোনিকে সংযুক্ত করে একটি জায়গা তৈরি করে যাকে বার্থ ক্যানাল বলে (সন্তান ভুমিষ্ঠ হওয়ার সময় জরায়ু থেকে এই পথেই বাইরে উন্মুক্ত হয়)। সার্ভিক্যাল ক্যান্সারের সংক্রমণ সার্ভিক্সের পৃষ্ঠতলে হয়ে থাকে। এটা যোনিতে হয়ে থাকলে তাকে এক্টোসার্ভিক্স আর ক্যানেলে হয়ে থাকলে তাকে এন্ডোসার্ভিক্স বলে।
সার্ভিক্যাল ক্যান্সার দুই ধরনের হয়ে থাকেঃ স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা, বেশিরভাগ (৮০% থেকে ৯০%)সার্ভিক্যাল ক্যান্সার এই ধরনের হয়ে থাকে এবং সার্ভিক্সের বাইরের পৃষ্ঠে এর সংক্রমণ হয়ে থাকে এবং অ্যাডিনো কারসিনোমার (১০% থেকে ২০%) সংক্রমণ বার্থ ক্যানালের নীচের অংশে অবস্থিত গ্রন্থি কোষ যা সার্ভিক্সের ভেতরের অংশে হয়ে থাকে।
পরিসংখ্যান
ধারণা করা হচ্ছে প্রায় ১৪,৪৮০ জন নারী এই মারাত্মক ক্যান্সারে আক্রান্ত হবে। হিস্পানিক ও কৃষ্ণাঙ্গ নারীদের ক্ষেত্রে সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি। চলতি বছরে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে ৪,২৯০ জন মারা যাবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
ঝুঁকির কারণ এবং লক্ষণসমূহ
সার্ভিক্যাল ক্যান্সারে সংক্রমিত হওয়ার ঝুঁকির কারণসমূহের মধ্যে রয়েছে-
- হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (HPV) এর সংক্রমণ
- দূর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা
- হার্পিস
- ধূমপান
- বয়স (৩০ বছরের অধিক)
- নিম্ন আর্থ-সামাজিক অবস্থা
- বর্ণ (কৃষ্ণাঙ্গ, হিসপানিক, আমেরিকান ইন্ডিয়ান নারী)
- ওরাল কনট্রাসেপটিভ সেবন
- ডাই-ইথাইল স্টিলবেস্ট্রল (DES)
লক্ষণসমূহের মধ্যে রয়েছে রক্তের দাগ বা মাসিক চলাকালীন সময়ে বা পরবর্তীতে হালকা রক্তপাত, দীর্ঘদিন ধরে, প্রচুর মাসিকের রক্তপাত, সহবাসের পর রক্তপাত,যোনিপথের বাইরের দিকে কোন পরিষ্কারক তরল দিয়ে পরিষ্কার করা বা শ্রোণীদেশের পরীক্ষা করানো, যোনিপথ দিয়ে স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, সহবাসের সময় ব্যথা, মেনোপজের পর ব্যথা, অজ্ঞাত কারণবশত দীর্ঘদিন ধরে শ্রোণিচক্র বা কোমড়ে ব্যথা।
প্রতিকার
- কৈশোরের শেষের দিকে বা আরো অধিক বয়সে অনেকটা দেরিতে প্রথম যৌন মিলন করা
- একের অধিক সঙ্গীর সাথে যৌন মিলন এড়িয়ে চলা
- যৌন মিলনের ক্ষেত্রে এমন সঙ্গীকে এড়িয়ে চলা যে ইতিপূর্বে আরো অনেকের সাথে মিলিত হয়েছে
- নিরাপদ সহবাস অভ্যাস করা, যেমন কনডম ব্যবহার করা; যদিও কনডম ব্যবহারের ফলে পুরোপুরিভাবে এইচপিভি এর বিরুদ্ধে সুরক্ষা প্রদান করে না
- নিয়মিত প্যাপ টেস্ট করা এবং ক্যান্সারের পূর্ব লক্ষণগুলো দেখা দিলে তার চিকিৎসা করা
- ধূমপান ত্যাগ করা
চিকিৎসা
বর্তমানে যে চিকিৎসাগুলো প্রদান করা হয়ে থাকে সেগুলো হচ্ছে সার্জারি (কনিজেশন, LEEP, হিস্টেরেক্টমি, বাইল্যাটেরাল স্যালপিঙ্গো-ওফোরেক্টমি, র্যাডিক্যাল ট্র্যাকেলেক্টমি, এক্সেনটিরেশন), কেমোথেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি।