পায়ুপথের ক্যান্সার

মলদ্বার রেকটামের (বৃহদান্ত্রের নীচের অংশ) শেষপ্রান্তে অবস্থিত এবং লম্বায় প্রায় ১ থেকে দেড় ইঞ্চি হয়ে থাকে। মলদ্বার রেকটামকে দেহের বাইরের দিকে উন্মুক্ত অংশের সাথে যুক্ত করে থাকে। এর প্রধাণ কাজ হচ্ছে তরল নয় এমন শক্ত বর্জ্য পদার্থ শরীর থেকে বের করে দেওয়া। স্কোয়ামাস সেল দ্বারা মলদ্বার আবৃত থাকে; বেশীরভাগ ক্যান্সার এই স্কোয়ামাস সেলেই বিস্তার লাভ করে থাকে। বিভিন্ন ধরনের পায়ুপথের ক্যান্সারের মধ্যে রয়েছে স্কোয়ামাস সেল কারসিনোমা, ক্লোয়াকোজেনিক কারসিনোমা, অ্যাডিনোকারসিনোমা, ব্যাসাল সেল কারসিনোমা এবং মলদ্বারের মেলানোমা। 

পরিসংখ্যান
পায়ুপথের ক্যান্সারে আক্রান্ত প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির সংখ্যা ৯০৯০ জন (পুরুষ ৩,০২০ জন এবং নারী ৬,০৭০ জন)। বেশীরভাগ স্কোয়ামাস সেল পায়ুপথের ক্যান্সারের কারণ হচ্ছে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি)। পায়ুপথের ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীদের গড়পড়তা বয়স হচ্ছে ৬০ বছর বা তার কাছাকাছি। ধারণা করা হচ্ছে চলতি বছরে এই রোগে আক্রান্ত হয়ে প্রায় ১,৪৩০ (পুরুষের সংখ্যা ৫৬০ জন এবং নারীর সংখ্যা ৮৭০ জন) জন মানুষ মারা যাবে। এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার পর প্রায় ৫ বছর অবধি বেঁচে ছিল এমন ব্যক্তির সংখ্যা প্রায় ৬৯%।

ঝুঁকির কারণ এবং লক্ষণসমূহ 

  • বয়স (৫০ এর অধিক)
  • হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি) ইনফেকশন বা অ্যাকোয়ার্ড ইমিউনো ডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম (এইডস)
  • ইতিমধ্যে প্রায় ১০ এর অধিক ব্যক্তির সাথে সঙ্গমে লিপ্ত হয়েছে এমন ব্যক্তি
  • পায়ুপথে যৌন সঙ্গম
  • প্রায়শ পায়ুপথ লালচে রং এর হয়ে যাওয়া, ফুলে যাওয়া এবং ক্ষত
  • তামাক সেবন
  • রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়া, যেমন অঙ্গ প্রতিস্থাপনের পর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমানোর ঔষধ সেবন করা
  • ফিশ্চুলা

প্রতিরোধ
পায়ুপথে যৌন সঙ্গম এড়িয়ে চলা, অধিক সংখ্যক ব্যক্তির সাথে সঙ্গম না করা, এইচপিভি টিকা গ্রহণ, ধূমপান এড়িয়ে চলা। 

চিকিৎসা
বর্তমানে যেসকল চিকিৎসা প্রদান করা হয়ে থাকে তার মধ্যে রয়েছে সার্জারি (লোকাল রিসেকশন, অ্যাবডমিনোপেরিনিয়াল রিসেকশন), কেমোথেরাপি, (চেকপয়েন্ট ইনহিবিটরস, ফ্লুরোইউরাসিলের সাথে মিটোমাইসিন সি বা সিসপ্লাটিনের কম্বিনেশন  থেরাপি) ইমিউনোথেরাপি, রেডিয়েশন থেরাপি (ইনটেনসিটি-মডিউলেটেড রেডিয়েশন থেরাপি (আইএমআরটি), প্রোটন থেরাপি)। সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে যে সার্জারি এবং রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপির কম্বিনেশন চিকিৎসার সফলতা প্রায় একই।  


Fighting Cancer Desk
ফাইটিং ক্যান্সার ডেস্ক