লিউকেমিয়া কি? রক্ত তৈরির আদি কোষ লিউকোসাইটে লিউকেমিয়া হয়ে থাকে। যদিও বেশিরভাগ লিউকেমিয়া শ্বেত রক্তকোষে শুরু হয়ে থাকে কিন্তু কিছু কিছু লিউকেমিয়া অন্যান্য রক্তকোষেও শুরু হয়ে থাকে। শ্বেত রক্তকোষের জিনগত উপাদান (DNA) ক্ষতিগ্রস্ত হলে বা পরিবর্তনের ফলে এই কোষগুলোর পূর্ণতা বা ক্রিয়া ব্যাহত হলে লিউকেমিয়া বিস্তার ঘটায়। এই কোষগুলো কেবলমাত্র সংখ্যায় বাড়তে থাকে এবং অস্থিমজ্জায় জমা হতে থাকে যা সাধারণ শ্বেত ও লোহিত রক্তকোষ ও অনুচক্রিকা তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়াকে বন্ধ করে দেয়, এই অবস্থা ধীরে ধীরে লিউকেমিয়ার দিকে ধাবিত হয়।
লিউকেমিয়া অ্যাকিউট লিম্ফোটিক লিউকেমিয়া (ALL), অ্যাকিউট মায়েলয়েড লিউকেমিয়া (AML), ক্রনিক লিম্ফোসাইটিক লিউকেমিয়া (CLL), ক্রনিক মায়েলয়েড লিউকেমিয়া (CML), মায়েলোপ্রলিফারেটিভ নিওপ্লাজম ও সিস্টেমিক ম্যাস্টোসাইটোসিস ধরনের হয়ে থাকে।
পরিসংখ্যান
লিউকেমিয়ায় নতুন আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ৬০,৫৩০ জন। নতুন সংক্রমিত ক্যান্সারের মধ্যে এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার ৩.৪% এবং এর থেকে মৃতের সংখ্যা প্রায় ২৩,১০০ জন।
ঝুঁকির কারণ এবং লক্ষণসমূহ
পূর্বে পরিবারের কারো ক্যান্সার হওয়া ছাড়াও যে কারণগুলো ঝুঁকি বৃদ্ধি করে থাকে তার মধ্যে রয়েছে ক্যান্সার সৃষ্টি করে এমন এজেন্টের সংস্পর্শে আসলে, উচ্চ মাত্রার রেডিয়েশন যাতে উচ্চমাত্রার দ্রাবক রয়েছে যেমন বেনজিন, এজেন্ট অরেঞ্জ-দীর্ঘ সময় ধরের এমন রেডিয়েশনের সংস্পর্শে থাকলে, ধূমপান, পূর্বে রেডিয়েশন বা কেমোথেরাপি নিয়ে থাকলে, বিরল জেনেটিক সিনড্রোম, যাদের ডাউন সিনড্রম রয়েছে, ফ্যানকোনি অ্যানিমিয়া, অ্যাটাক্সিয়া-টেলানজিয়েক্টাসিয়া এবং ব্লুম সিনড্রোম।
লক্ষণসমূহের মধ্যে রয়েছে অ্যানিমিয়া,অণুচক্রিকার (এক ধরনের রক্তকণিকা যা রক্ত জমাট বাঁধতে ও ক্ষত সারাতে সহায়তা করে) মাত্রা কমে যাওয়ার ফলে দগদগে হয়ে যাওয়া বা রক্তক্ষরণ, রোগ প্রতিরোধে সহায়তাকারী শ্বেত রক্তকোষের মাত্রা কমে যাওয়ার ফলে সংক্রমণ, জ্বর, ঘুমের মধ্যে অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়া, অনিচ্ছাকৃত ওজন কমে যাওয়া এবং অবসাদ, দূর্বলতা, ক্লান্তি ও অবসাদ, জ্বর এবং বার বার সংক্রমণ, রাতে ঘেমে যাওয়া, সহজেই রক্তক্ষরণ ও দগদগে হয়ে যাওয়া যেমন দাঁতের মাড়ি থেকে রক্তপাত, পেটেশিয়া (ত্বক থেকে রক্তক্ষরণের ফলে ত্বকের জায়গায় জায়গায় লাল হয়ে যাওয়া), শ্বাস নিতে কষ্ট হওয়া, ঘাড়, বগলের নীচে, পাকস্থলী বা কুঁচকিতে অবস্থিত লিম্ফনোড ফুলে যাওয়া, ক্ষুধামন্দা বা খুব অল্প খেলেও প্লীহা আকারে বড় হয়ে যাওয়ার কারণে উদরপূর্তির অনুভূতি, অজ্ঞাত কারণবশত ওজন কমে যাওয়া, হাড় এবং হাড়ের জোড়ায় ব্যথা এবং নারীদের ক্ষেত্রে স্বাভাবিকের চেয়ে অধিক সময় ও প্রচুর পরিমাণে ঋতুস্রাব হওয়া।
প্রতিকার
হাড়ের ক্যান্সার প্রতিরোধের কোন উপায় নেই।
চিকিৎসা
চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে টার্গেটেড থেরাপি, কেমোথেরাপি, কার T সেল থেরাপি বা বিভিন্ন ধরনের ইমিউনোথেরাপি, বোন ম্যারো বা হেমাটোপয়েটিক স্টেম সেল ট্রান্সপ্লানটেশন।