ক্যান্সারের উৎপত্তিস্থল অনুযায়ী যকৃতের ক্যান্সার প্রাইমারি বা সেকেন্ডারি হতে পারে। যদি যকৃতের টিস্যুতে ক্যান্সারের সৃষ্টি হয়ে থাকে তাহলে সেটাকে প্রাইমারি যকৃত ক্যান্সার বলা হয়। আর যদি শরীরের অন্যান্য অংশে উৎপত্তি হয়ে যকৃতে ছড়িয়ে পড়ে তাহলে তাকে সেকেন্ডারি যকৃত ক্যান্সার বলা হয়। যকৃতের ক্যান্সারের মধ্যে হেপাটোসেলুলার কারসিনোমার সংক্রমণ সবচেয়ে বেশি হয়ে থাকে। এছাড়াও অন্যান্য যকৃতের ক্যান্সারের মধ্যে রয়েছে হেপাটোব্লাস্টোমা ও ইন্ট্রাহেপাটিক কোলানজিও কারসিনোমা। যেহেতু যকৃতে অনেক ধরনের কোষ থাকে, তাই এখানে অনেক ধরনের টিউমার হয়ে থাকে।
পরিসংখ্যান:
বিশ্বব্যাপী ক্যান্সার আক্রান্তের হিসেব অনুযায়ী যকৃত ক্যান্সার ষষ্ঠ সর্বাধিক সংক্রমিত ক্যান্সার। এটি পুরুষদের মধ্যে পঞ্চম এবং নারীদের মধ্যে নবম সর্বাধিক সংক্রমিত ক্যান্সার, আক্রান্ত রোগীদের গড় বয়স প্রায় ৬৩ বছর।
ঝুঁকির কারণ এবং লক্ষণসমূহ:
- অত্যধিক অ্যালকোহল সেবন
- লিঙ্গ (পুরুষ)
- স্থূলতা
- বর্ণ (এশীয় আমেরিকান, প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপপুঞ্জে বসবাসকারী অধিবাসিরা)
- যকৃতে অত্যধিক চর্বি জমে যাওয়ার ফলে সৃষ্ট অসুখ
- পূর্বপুরুষগতভাবে চলে আসা সৃষ্ট যকৃতের অসুখ
- সিরোসিস
- দীর্ঘদিনযাবত সংক্রমণ যেমন HBV বা HCV এর সংক্রমণ
- ডায়াবেটিস
- আফ্লাটক্সিনের (এক ধরনের বিষ) সংস্পর্শে আসলে
লক্ষণসমূহের মধ্যে রয়েছে বমি বমি ভাব, বমি করা, তলপেটের উপরের অংশে ব্যথা, তলপেট ফুলে যাওয়া, সাদা রং এর মলত্যাগ করা, অবসাদ, দূর্বলতা, ক্ষুধামন্দা, অজ্ঞাতকারণবশত ওজন কমে যাওয়া, চোখ সাদাটে হয়ে যাওয়া, ত্বকের রং হলুদাভ হওয়া।
প্রতিকার:
- পরিমিত অ্যালকোহল সেবন
- বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী সঠিক ওজন বজায় রাখা
- হেপাটাইটিস বি এর টিকা গ্রহণ করা
- হেপাটাইটিস সি এর সংক্রমণ রোধে সতর্কতামূলক ব্যবস্থা গ্রহণ
- যকৃত ক্যান্সারের স্ক্রিনিং টেস্ট করানো
চিকিৎসা:
যেসকল চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো রয়েছে তা হল সার্জারি ( টিউমার অপসারণ, যকৃত প্রতিস্থাপন), নির্দিষ্ট জায়গায় সরাসরি চিকিৎসা প্রদান (টিউমারের ভেতর ইনজেকশনের মাধ্যমে অ্যালকোহল বা কেমোথেরাপির জন্য ঔষধ প্রদান করা, ক্যান্সার কোষগুলোকে স্থবির করে দেওয়া, ক্যান্সার কোষগুলোকে তাপ প্রদান করা), রেডিয়েশন থেরাপি, ইমিউনোথেরাপি, টার্গেটেড থেরাপি, কেমোথেরাপি, সহায়ক সেবা প্রদান করা।