ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার নির্দিষ্ট কোনো বয়সসীমা না থাকলেও প্রাথমিকভাবে মেনে চলার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ বরাবরই দিয়ে থাকেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও এ কঠিন ব্যাধিতে আক্রান্ত হবার নির্দিষ্ট কারণ সবসময় বিশ্লেষণ করা হয় না, তবে যথাযথ সাবধানতা অবলম্বন করলে এর ঝুঁকি অনেকাংশে কমে যায়। এ কারণে নারী-পুরুষ সকলকে ৩০ বছর বয়সের পর থেকেই কিছু নিয়ম মেনে জীবনযাপনের জন্য পরামর্শ দেয়া হয়। বর্তমানে আক্রান্ত হবার সংখ্যা ক্রমাগত বেড়েই চলছে বলে পরামর্শদাতা চিকিৎসক ও ক্যান্সার বিশেষজ্ঞরা যতোটুকু সম্ভব সব বয়সের সকলকে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে অভ্যস্ত হতে বলছেন।

স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় অবশ্যই পরিমিত পরিমাণে ফলমূল ও শাকসবজি রাখতে হবে। থাকতে হবে প্রচুর পরিমাণে আঁশ জাতীয় খাবার ও পানি। সব ধরনের প্রক্রিয়াজাত খাবার, বিশেষ করে মাংস ও লাল মাংস, অতিরিক্ত ভাজা (ডিপ ফ্রাইড) খাবার বর্জন করা আবশ্যক। চিনি ও লবণকে বলা হয় সাদা বিষ। তাই অতিরিক্ত চিনি ও লবণযুক্ত খাবার খাওয়া উচিত না। খাবার তৈরির ক্ষেত্রে যথাসম্ভব তেলের পরিমাণ কমিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত পরিবেশ নিশ্চিত করা জরুরি। অল্প আঁচে রান্না করা খাবারের পুষ্টিগুণ বেশি বজায় রাখা যায়।

নিয়মিত ব্যায়াম ও শরীরচর্চা: নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস সব ধরনের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে। দেহে যেকোনো অনাকাঙ্ক্ষিত পরিবর্তন রোধে ও কোষ বৃদ্ধির সঠিক হার বজায় রাখে ব্যায়াম ও শরীরচর্চা। কোনো রকমের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ নড়াচড়া ছাড়া জীবনযাপন করলে স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়তে থাকে দিনের পর দিন।

নিয়ন্ত্রিত ওজন: অতিরিক্ত ওজন সবসময়ই ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে প্রাপ্তবয়স্ক প্রত্যেককে শরীরের গঠন অনুসারে অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য সচেতন হতে হবে। অতিরিক্ত ওজন জরায়ু ও স্তন ক্যান্সারের পাশাপাশি যকৃত বা পিত্তথলির ক্যান্সারের ঝুঁকি বহুগুণে বাড়িয়ে দেয়।

ধূমপান ও মদ্যপান ত্যাগ: ফুসফুসসহ সব ধরনের ক্যান্সারে সরাসরি ভূমিকা রাখে ধূমপান ও অনিয়ন্ত্রিত মদ্যপানের অভ্যাস। নিজের চেষ্টায় ও বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিয়ে যত দ্রুত সম্ভব এ অভ্যাসগুলো ত্যাগ করা উচিত।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা: ৩০ বছর বয়সের পর থেকে ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়াতে নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করে দেখা উচিত। চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সচেতন না হওয়ার কারণে ফুসফুস, স্তন, জরায়ু, জরায়ু মুখ, মলাশয় ও মলদ্বারের ক্যান্সারে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি ও ভয়াবহতা অনেকাংশে বেড়ে যায়।

নিরাপদ দৈহিক সম্পর্ক: নিরাপদ ও সুস্থ যৌন সম্পর্ক বজায় রাখলে ক্যান্সারসহ অন্যান্য যৌনরোগের সম্ভাবনা কমানো সম্ভব। সঙ্গীর শারীরিক অবস্থা পরীক্ষা করে তবেই যৌন মিলনে অগ্রসর হতে হবে।

তেজস্ক্রিয়তা থেকে দূরে থাকা: যতোটুকু সম্ভব এক্সরে, সিটি স্ক্যানের মতো চিকিৎসার পরীক্ষাগুলো কম করাতে হবে। এখানে ব্যবহৃত তেজস্ক্রিয় রশ্মি ও অতিরিক্ত সূর্যের আলো থেকে আসা অতিবেগুনি রশ্মি ত্বকসহ দেহের অভ্যন্তরীণ গঠনে বিরূপ প্রভাব সৃষ্টি করে।


Fighting Cancer Desk
ফাইটিং ক্যান্সার ডেস্ক