গত ২৪ অক্টোবর থেকে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধে হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের(এইচপিভি) এক বিশেষ টিকাদান কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
এই কর্মসূচির আওতায় ঢাকা বিভাগ বাদে বাকি সাত বিভাগের প্রায় ৬২ লাখ এইচপিভি টিকা দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে। পঞ্চম থেকে নবম শ্রেণীতে অধ্যয়নরত ছাত্রী এবং এর বাইরেও ১০ থেকে ১৪ বছরের কিশোরীদের বিনামূল্যে এই টিকা প্রদান করা হচ্ছে।
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের অধীনে এই কর্মসূচি পরিচালনা ও সহযোগিতার দায়িত্বে রয়েছে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচি (ইপিআই), ইউনিসেফ, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ও গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনস অ্যান্ড ইমিউনাইজেশনস (গ্যাভি)।
গত ২২ অক্টোবর, রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে একটি আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় এবং সেখানে জরায়ুমুখ ক্যান্সার সংক্রান্ত নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়।
উক্ত অনুষ্ঠানে মাতৃ, নবজাতক, শিশু ও কিশোর স্বাস্থ্য বিভাগের লাইন ডিরেক্টর মোহাম্মদ নিজাম উদ্দিন, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা ও উন্নয়ন) শেখ সাইদুল হক, রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয়; জন্ম, মৃত্যু নিবন্ধন ও স্থানীয় সরকার বিভাগের অতিরিক্ত মহাসচিব মো. যাহিদ হোসেন, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. সাইফুল্লাহিল আজম, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উপপ্রতিনিধি ডা. রাজেশ নারওয়াল, বাংলাদেশে ইউনিসেফের ভারপ্রাপ্ত প্রতিনিধি এমা ব্রিগহাম সহ আরো অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এই টিকা গ্রহণের জন্য আগে থেকেই ভ্যাস্কইপিআই (VaxEPI)’ অ্যাপে বা https://vaxepi.gov.bd/registration ওয়েবসাইটে গিয়ে নিবন্ধন করতে হবে। নির্দিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও টিকাদান কেন্দ্রে এই টিকা দেওয়া হবে।
২০২৩ সালে ঢাকা বিভাগে প্রায় ১৫ লক্ষ কিশোরীকে এইচপিভি টিকা দেওয়া হয়েছিল এবং উল্লেখ্য যে কোনো ধরনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পরিলক্ষিত হয়নি।
বর্তমানে, নারীদের মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের প্রকোপ উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে গেছে। বিশ্বব্যাপী যতগুলো ক্যান্সারে নারীরা আক্রান্ত হয় তার মধ্যে এই ক্যান্সারের অবস্থান চতুর্থ এবং বাংলাদেশের ১৫-৪৪ বছর নারীদের ক্ষেত্রে এই ক্যান্সার দ্বিতীয় দায়ী কারণ। নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোতে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের প্রকোপ বেশি।
স্ক্রিনিং টেস্ট না করানো, বাল্যবিবাহ, অল্প বয়সে শারীরিক সম্পর্ক, যৌনরোগ এবং আর্থ-সামাজিক অবস্থার দৈন্যদশার কারণে বাংলাদেশে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের প্রকোপ বেশি।
অল্প বয়সে স্ক্রিনিং টেস্ট করালে জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রায় ৯৩% প্রতিরোধ করা সম্ভব। এটি ক্যান্সারের কোনো টেস্ট নয় কিন্তু স্ক্রিনিং টেস্টের মাধ্যমে জরায়ুতে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধি পরিলক্ষিত হয়।