প্রকাশ : ২১ অগাস্ট ২০২৪, ১০ :৫৩

মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সারের জন্য তামাক ও অ্যালকোহল সেবন কী কোনোভাবে দায়ী?

বিশ্বে যে ক্যান্সারগুলোর প্রকোপ সবচেয়ে বেশি তার মধ্যে মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সারের অবস্থান অষ্টম। এই ধরনের ক্যান্সার চল্লিশোর্ধ্বদের ক্ষেত্রেই বেশি দেখা যায়। ধূমপান ও মদ্যপানের আধিক্যের ফলে পুরুষদের এই ক্যান্সার সংক্রমণের ঝুঁকি বেশি।

মাথা বা ঘাড়ের বিভিন্ন অংশ, যেমন মুখ, গলা, নাকগহ্বর, সাইনাস, লালাগ্রন্থি ও লিম্ফনোডে মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার হয়।

তামাক সেবনের ফলে মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সারের মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি হয়। তামাক জাতীয় পণ্য ধোঁয়াযুক্ত (সিগারেট, সিগার,ই-সিগারেট) বা ধোঁয়া ছাড়া হতে পারে (চিবিয়ে খাওয়া যায় এমন তামাক)। এই ধরনের পণ্যে কার্সিনোজেন থাকে যা থেকে ক্যান্সার হয়।

ধূমপানের ফলে মাথা ও ঘাড়ের স্কোয়ামাস সেল কার্সিনোমা হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় দ্বিগুণ বেড়ে যায়। পরোক্ষ ধূমপানের ফলেও এই ধরনের ক্যান্সার হওয়ার বেশ ঝুঁকি থাকে।

যেসকল রোগীর ইতিমধ্যে মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সার নির্ণয় হয়েছে তারা যদি ধূপমান বন্ধ না করে তাহলে তাদের চিকিৎসার অগ্রগতি বিঘ্নিত হয় এবং সুস্থ হয়ে উঠার গতি ধীর হয়ে যায়। শুধু তাই নয়, এর ফলে আক্রান্তদের মধ্যে বেঁচে থাকার সময়সীমাও হ্রাস পায় এবং ক্যান্সার পুনরায় ফিরে আসার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়।

মাথা ও ঘাড়ের ক্যান্সারের অন্যতম আরেকটি প্রধাণ কারণ হচ্ছে অ্যালকোহল সেবন। এর ফলে বিশেষ করে মুখ, স্বরনালী ও গলার ক্যান্সার হয়। দিনে তিন থেকে চার পেগ অ্যালকোহল সেবন করলে যারা মদ্যপান করে না তাদের তুলনায় এসকল ব্যক্তিদের এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় প্রায় ৩ গুণ।

আর যারা ধূমপান ও মদ্যপান দুটোই করেন তাদের এই ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সর্বোচ্চ ঝুঁকি থাকে। ইউরোপের প্রায় ৭৫% মুখের ক্যান্সারের জন্য এই দুটি কারণ দায়ী (যাদের এই দুই অভ্যাসই রয়েছে)। দীর্ঘদিন ধরে ও প্রচুর পরিমাণে মদ্যপানের ফলে মুখ ও গলার ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

কীভাবে ধূমপান ও মদ্যপান প্রতিরোধ করা যায়?

কোনো কিছুর অভ্যাস ছেড়ে দেওয়াটা সহজ নয়, এটা ভীষণ চ্যালেঞ্জিং।ধুমপান এড়িয়ে চলার জন্য আমরা কিছু বিকল্প পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারি, যেমন-

  • কাউন্সেলিং
  • সামনাসামনি বসে কথা বলা
  • হটলাইনের মাধ্যমে
  • ওয়েবসাইটের মাধ্যমে
  • অ্যাপস
  • নিকোটিন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি
  • প্যাচেস
  • ঔষধ
  • ভারেনিক্লাইন
  • বুপ্রোপিয়ন


এবার আসা যাক অ্যালকোহল সেবন কীভাবে কমানো যায় সে বিষয়ে। পরিমিত পরিমাণে অ্যালকোহল সেবনের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে। পার্লমুটার ক্যান্সার সেন্টারের তথ্য অনুযায়ী, যারা মদ্যপানে অভ্যস্ত তাদের জন্য পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রতিদিন দুই পেগের বেশি নয় এবং নারীদের ক্ষেত্রে এক পেগ গ্রহণের জন্য পরামর্শ দেওয়া হয়।

প্রতিরোধমূলক এ ব্যবস্থাগুলো গ্রহণের পূর্বে অবশ্যই একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে। এই পদক্ষেপগুলো গ্রহণের ফলে কী ধরনের প্রভাব শরীরের উপর পড়তে পারে বা কী কী পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে সেগুলো নিয়ে অবশ্যই আলোচনা করা উচিত। 


Fighting Cancer Desk
ফাইটিং ক্যান্সার ডেস্ক