চারপাশের তাপমাত্রা বেড়ে গেলে একজন সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের ক্ষেত্রে শরীরকে শীতল রাখা খুবই জরুরি একটি বিষয়। তবে, একজন ক্যান্সার রোগীর জন্য বিষয়টি আরও গুরুত্বপূর্ণ। অন্যথা, একজন ক্যান্সার রোগী সমূহ বিপদে পড়তে পারেন।
সাধারণত, প্রচন্ড গরমে শারীরিক অস্বস্তি, যেমন ঘাম, জ্বালাপোড়া, অবসাদ ও ঘুমের সমস্যা হয়ে থাকে। ক্যান্সার রোগীদের ক্ষেত্রে এই সমস্যাগুলো আরো প্রকট হয়ে ওঠে।
যেসব রোগী রেডিওথেরাপি নিচ্ছেন বা নিয়েছেন তাদের ত্বক শুষ্ক হয়ে যায়, চুলকানি হয়, ত্বক লাল হয়ে যায় এবং ফোস্কার মতো দেখা দেয়। অতিরিক্ত গরম বা রোদের সংস্পর্শে আসলে এগুলো আরো বেড়ে যায়।
কেমোথেরাপিতে ব্যবহৃত কিছু কিছু ঔষধ আলোক সংবেদনশীল হয়ে থাকে ফলে যারা কেমোথেরাপি নিচ্ছেন প্রখর রোদের সংস্পর্শে আসলে তাদের সানবার্ন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এবং ত্বক ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে। কেমোথেরাপির ফলে কিডনি, হৃদপিন্ড, ফুসফুস, থাইরয়েড ও এড্রেনাল গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে এবং এর ফলে শরীরে হয়ে পানি ও ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যের তারতম্য দেখা দিতে পারে৷
তীব্র গরম আবহাওয়ায় ক্যান্সার রোগীরা যেসকল সমস্যার মুখোমুখি থাকেন:
পানিশূণ্যতা:
অনেক ক্যান্সার রোগীর ক্ষেত্রে দেখা যায় যে ক্যান্সার চিকিৎসা চলাকালীন
ক্ষুধামন্দা দেখা দেয় এবং পানি পিপাসা বোধ হয় না। অনেকের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া ও বমি
হয়ে থাকে ফলে শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দেয়। গরমকালে এই পরিবেশগত উষ্ণতার কারণে এই
সমস্যাগুলো প্রকট হয়ে ওঠে।
সানবার্ন:
বিভিন্ন ধরনের ক্যান্সার চিকিৎসা, যেমন কেমোথেরাপি,
রেডিওথেরাপি ও টার্গেটেড থেরাপির ফলে অনেকসময় ত্বক পুড়ে যায়।
তীব্র রোদ বা প্রচন্ড গরমে এই পুড়ে যাওয়া ত্বক আরো ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে পড়ে।
ইনফেকশন:
কেমোথেরাপি দেওয়ার ফলে শরীরে শ্বেত রক্তকণিকার পরিমাণ কমে যায় এবং রোগ
প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে। এর ফলে ব্যাকটেরিয়া ও প্যাথোজেনের দ্বারা
সংক্রমণের প্রবণতা বেড়ে যায় এবং ফুড পয়জনিং হতে পারে।
একজন ক্যান্সার রোগী বা সেবা প্রদানকারী হিসেবে গ্রীষ্মকালে কিছু বিষয় মেনে চলা অত্যাবশ্যক-
- যেসব ফলমূল ও শাকসবজিতে অধিক পানির পরিমাণ ও ইলেক্ট্রোলাইট রয়েছে
সেগুলো আহারে গ্রহণ করা।
- ক্যাফেইন এড়িয়ে চলা।
- দিনের মধ্যভাগের সময় বাইরে বেরোনো থেকে বিরত থাকা এবং বাইরে থাকাকালীন
সময়ে ছায়াযুক্ত স্থানে থাকার চেষ্টা করতে হবে।
- আরামদায়ক ও ফুলহাতা পোশাক পরতে হবে যাতে শরীরের বেশিরভাগ অংশ ঢেকে
থাকে।
- নিয়মিত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ রাখতে হবে।
তথ্যসূত্র:
https://www.henryford.com/blog/2017/08/3-ways-summer-affects-cancer-patients
https://www.foxchase.org/blog/5-summer-safety-tips-cancer-patients-and-survivors
https://ascopubs.org/doi/10.1200/JCO.22.01951
https://endeavor.moffitt.org/archive/summer-reminders-for-cancer-survivors