আজকে আমরা এক আক্রমণাত্মক ও চ্যালেঞ্জিং ক্যান্সার সম্পর্কে জানব। গ্লিওব্লাস্টোমা এক ধরনের ব্রেইন ক্যান্সার। যুক্তরাষ্ট্রের সিনেটর জন ম্যাককেইন, টেড কেনেডি ও প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের পুত্র বিউ বাইডেন এই মরণব্যধি ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে মারা যাওয়ার পরে গ্লিওব্লাস্টোমা বিশ্বব্যাপী সবার জ্ঞাতার্থে আসে।
২০১৯ সাল থেকে প্রতি জুলাই মাসের তৃতীয় বুধবার গ্লিওব্লাস্টোমা সচেতনতা দিবস হিসেবে পালিত হয়ে আসছে। ব্রেইনের গ্ল্যায়াল কোষে এই ক্যান্সারের উৎপত্তি হয় এবং খুব দ্রুত এর বৃদ্ধি ঘটে ও ছড়িয়ে পড়ার প্রবণতাও থাকে ব্যাপক। আর এই কারণে গ্লিওব্লাস্টোমার চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে পড়ে। তবে সার্জারির মাধ্যমে এই ক্যান্সার নিরাময় করার চেষ্টা করা হয়।
ঠিক কী কারণে এই ক্যান্সার হয় তা এখনো অজানা, তবে গবেষকরা কিছু কিছু বিষয়, যেমন-রেডিয়েশনের সংস্পর্শ ও বংশানুক্রমিক ধারাকে এই ক্যান্সারের জন্য দায়ী হতে পারে বলে মনে করেন। গ্লিওব্লাস্টোমা দুই ধরনের হয়:
- প্রাইমারী গ্লিওব্লাস্টোমা: এই ধরনের ক্যান্সার আক্রমণাত্মক স্বভাবের হয় এবং এর সংক্রমণের হারও অধিক। বয়স্ক ব্যক্তিরা এই ক্যান্সারে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকেন এবং আক্রান্তদের মধ্যে বেঁচে থাকার সময়সীমাও খুব অল্প হয়।
- সেকেন্ডারি গ্লিওব্লাস্টোমা: এই ধরনের ক্যান্সার অপেক্ষাকৃত কম আক্রমণাত্মক স্বভাবের হয় এবং এর সংক্রমণের হারও অনেক কম। লো গ্রেডের টিউমার থেকে এই ক্যান্সারের উৎপত্তি হয় এবং তরুণদের ক্ষেত্রে এই ক্যান্সারের সংক্রমণ দেখা যায়। আক্রান্তদের মধ্যে বেঁচে থাকার সময়সীমা প্রাইমারী গ্লিওব্লাস্টোমায় আক্রান্তদের চেয়ে কিছুটা বেশি হয়।
টিউমারের উৎপত্তি ও অবস্থানের উপর ভিত্তি করে গ্লিওব্লাস্টোমার লক্ষণ রোগীভেদে ভিন্নতর হতে পারে:
- মাথাব্যথা
- খিঁচুনি
- বমিবমি ভাব
- বুদ্ধিবৃত্তিক জটিলতা
- দৃষ্টিশক্তিতে পরিবর্তন
- ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন
গ্লিওব্লাস্টোমায় আক্রান্তদের বেঁচে থাকার সময়সীমা খুবই ক্ষীণ। একজন ক্যান্সার রোগী চিকিৎসা গ্রহণ করলে গড়ে ১২-১৫ মাস বেঁচে থাকেন আর চিকিৎসা ছাড়া মাত্র চার মাস বেঁচে থাকার সম্ভাবনা থাকে।
এই ক্যান্সারের চিকিৎসায় সবচেয়ে কার্যকরী উপায় হচ্ছে সার্জারি। এছাড়াও রয়েছে রেডিয়েশন ও কেমোথেরাপি। কিন্তু এই চিকিৎসা পদ্ধতিগুলোর মধ্যে কোনোটাই রোগ নিরাময়কারী নয় কারণ এগুলো প্রতিটি টিউমার কোষকে পুরোপুরি ধ্বংস করতে পারে না।